top of page
Search
Writer's pictureMizanur Rahman

ধামরাই গর্বিত যে কারনে

Updated: May 20, 2022

আজ ধামরাই স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে বলতে পারে যারা দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষিত, জ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, ডক্টরেট এর জন্ম দিয়েছে এই ধামরাই তার অন্যতম।


ইতিহাসের প্রাচীন ও সমৃদ্ধশালী এলাকা ধামরাই বিদ্যা, বুদ্ধি, টাকা এই তিনে ঢাকা। আজকের এ ধামরাই কোন একদিন আয়তনে ও অবস্থানে এমন ছিলনা। কালের বিবর্তনে একটি সুন্দর সমৃদ্ধ গ্রাম শহরের আদল পেয়েছে। তখনও আর্যগণ এদেশে আসেনি। এ জনপদটি ছিল সমতল ও উর্বর।


মাটির এই টানে দ্রাবিড়গণ এখানে আসে এবং বসতি স্থাপন করে। গড়ে তাদের সভ্যতা, বৌদ্ধ যুগে এই সভ্যতার আরও অগ্রগতি হয়। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক ছুড়ে ফেলেন তার রক্ত বসন। পরলেন পীতবাস শরণ নিলেন বুদ্ধের দীক্ষিত হলেন অহিংস ধর্মে। অতঃপর তিনি বুদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য বেছে নিলেন ৮৪ হাজার গ্রাম। এই প্রচার কেন্দ্রগুলোকে বলা হত ধর্ম রাজিকা/ধর্ম রাজিয়া।

ধামরাই ছিল তন্মধ্যে অন্যতম প্রধান ধর্ম রাজিয়া বা প্রচারকেন্দ্র। ধর্ম রাজিয়া শব্দের অর্থ ধর্মরথ।

এই ধর্ম রাজিয়া হতে ধর্মরাজি বা ধর্মপুর এবং এ

থেকেই ধামরাই নামের উৎপত্তি(প্রচারিত)।


ইহা ছাড়াও শব্দগত আক্ষরিক অর্থে ধাম শব্দে গৃহ, বাসস্থান, তীর্থস্থান, পবিত্রস্থান বা জায়গাকে বুঝায়। আর রাই শব্দে কিশোরী রাধিকা, জীবনাত্মারূপ, শ্রীকৃষ্ণ প্রণয়িনী, শ্রী রাধিকা থেকে রাই সুতরাং ধামরাই শব্দটি পবিত্র তীর্থ এবং রাধিকা নামের সংক্ষিপ্ত রাই শব্দের সমন্বয়ে

গঠিত।



আজ ধামরাই: স্বগৌরবে মাথা উঁচু করে বলতে পারে যারা দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষিত, জ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, ডক্টরেট এর জন্ম দিয়েছে এই ধামরাই তার অন্যতম।

এখানেই জন্ম নিয়েছেন এই উপ-মহাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী,

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মরহুম আতাউর রহমান খান,

প্রফেসর ওয়াদুদুর রহমান, ইতিহাসখ্যাত আগরতলা মামলার অন্যতম আসামী, বাংলার জনসন কে এম সামসুর রহমান (সাবেক রাষ্ট্রদূত) দেশের প্রথম ডক্টরেট রায় চাঁদ, উপাধিখ্যাত ডঃ অনুকূল চন্দ্র সরকার, কবি কামিনী রায়(ধামরাইয়ের পুত্রবধূ), অামতার ভবা পাগলা, রোয়াইল জমিদার বাড়ির সন্তান ও ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার(টিএনটি) সুকুমার রায় পালধী, দেশের তৃতীয় ডক্টরেট মরহুম দাউদ আলী, ডঃ সুরত অালী খান, ডক্টর মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিন, ডঃ মোঃ নূরে আলম, সাবেক অর্থমন্ত্রী ড. এআর মল্লিক, যুদ্ধকালীন ধামরাই থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বর্তমান এমপি বেনজীর আহমদ, সাবেক এমপি ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, সাবেক এমপি জামাল উদ্দিন, ডঃ মোঃ মজিবুর রহমান, ডঃ মোঃ হানিফ আলী সিএসপি, মোঃ ওমর ফারুক সিএসপি, ডঃ আবুল কাসেম, ডঃ মোঃ লুৎফর রহমান, ডঃ মোঃ নাসির উদ্দিন, মোঃ আব্দুস সবুর সচিব আরও অনেক শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা।


এই কথা আজ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত যে, ধামরাই একটি ঐতিহ্যবাহী পুরুনো জনপদ। এই

নগরীর প্রায় বিলুপ্ত অট্টালিকারাজীর কারুকাজ মৃত্তিকা। এখানে উদগত পোড়া মাটির মন্ডাংশ এবং মাটির স্তর সে কথারই সাক্ষ্য দেয়।


৯০০ হিজরীর কোন একসময়ে ৫ জন সুফী দরবেশ আগমন করেন। আজও তাদের নামানুসারে ধামরাই পাঠানটোলায় অবস্থিত হযরত পাঁচপীর শাহ মাজার।


ধামরাই রথ ছিল জগৎ বিখ্যাত।


ধামরাই এর অন্যতম ঐতিহ্য তার সুপ্রসিদ্ধ রথ ও কাসা পিতলের বাসন কোসন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এটাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।

এই ধামরাই রথ মাধব অঙ্গন অঙ্গীয় দেবতা শ্রী যশোমাধব জিউর ব্যক্তিগত যান। এই যানে চড়ে

মাধব তার শ্বশুর বাড়ী গমন করেন আবার নিজ বাড়ী মাধব অঙ্গনে প্রত্যাবর্তন করেন।


ধামরাই থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার যাতায়াতের জন্য জল ও স্থল উভয়পথই ব্যবহার যোগ্য। এখানকার আবহাওয়া, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্যের অনুকূল।


শিক্ষা প্রতিষ্ঠান


ধামরাই হার্ডিঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়(স্থাপিত-১৯১৪) এবং



ধামরাই সরকারি কলেজ(স্থাপিত-১৯৭২)

ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়।


বংশী নদী আর কাকিলা জানি নদী ঘেরা এই ধামরাই। এই নদী দুটো কে নিয়ে একটি মিষ্টি মধুর প্রেমের কাহিনী জড়িয়ে আছে। বিবাহ বন্ধনকে চিরস্থায়ী করার মানস নিয়ে এতদ অঞ্চলে ত্রীমহনা পূজা প্রচলনের সঙ্গে এই অমর প্রেম গাথার কোন যোগসূত্র থাকলেও থাকতে পারে।

ঠাকুরমার বন্ধ সিন্ধুকের সোধাগন্ধ সার এবং পুরানো দিনের সারি সারি ইমারত আজও দেশী-বিদেশী বহু পর্যটককে টেনে আনে এই কিংবদন্তীর ধামরাইতে।


ধামরাই এর মাঝে খুজলে গ্রামের সেই আদিকালের চেহারাটাকে আজ আর পাওয়া যাবে না।

কিন্তু গ্রামীণ সংস্কৃতি তো মুছে যাবার নয়।

ঢুলি, পালকি না থাক, হাত পাখা আছে, পৌষ পাবন নবান্ন আছে। পিঠে একেবারে শেষ হয়ে যায়নি, আছে মেলা, মিলন মেলা।


#ধামরাইঐহিত্য #ধামরাইইতিকথা #মিজানওয়েব

16 views0 comments

Comments


bottom of page