top of page
Search
Writer's pictureMizanur Rahman

জীবনের গল্প একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের

Updated: May 3, 2023

ঢাকা জেলার ধামরাই গ্রামে জন্ম রহিমা আক্তারের, রহিমা একমাত্র সন্তান বাবা মায়ের, জন্মের ৬বছর পর বাবাকে হারায়,



ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ১৩ বছর বয়সে এসে হতভাগী রহিমা হারায় তার সেই শেষ সম্বল গর্ভধারিণী মা'কে, এখন সর্বহারা রহিমা।


এখন একজন যুবতী নারী রহিমা,

হয়তো রুপ না হয় টাকা, দু'টোর একটাও যদি না থাকে তাহলে আমাদের সমাজে সেই নারীর কোন ক্বদর নেই। বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, একজন নারী রুপবতী না হলে তার কোন মূল্য নেই সমাজে।


পাড়াপড়শীর বুদ্ধি পরামর্শ নিয়ে অবশেষে রহিমা চলে আসে বানিজ্যিক রাজধানী ঢাকা শহরে, তাদের বাড়ির অনেকেই সেখানে চাকরি করে FCI (DEPZ) গার্মেন্টসে, চাকরি করবে সেও, অশ্রুর বন্যা চোখে মুখে, যদি চাকরি না হয় রহিমার??? তাহলে যাবে কোথায়? খাবে কি? একটু গা ঢাকার জায়গা পাবে কোথায়? কেউ কারো খবর রাখেনা ইট পাথরের এই শহরে, কাল রহিমা গার্মেন্টসের গেইটে যাবে একটা চাকরির জন্য, এই ভেবেই কেটে গেল রহিমা চোখ ঝলঝল রাত।


সকাল এখন,

শুভ সকাল পোস্ট নিয়ে ব্যাস্ত আমরা সবাই ফেইসবুকে, আর গার্মেন্টসের গেইটে দাঁড়িয়ে রহিমা , হাত পা কাঁপতেছে না জানি কি হয়??? টলমল করছে চোখ।


গার্মেন্টসের নিয়োগদাতা অবশেষে ডাক দিল রহিমা কে,

অফিসার: নাম কি তোমার??

রহিমা: মোছাম্মৎ রহিমা আক্তার,

অফিসার :বাড়ি কোথায়?

রহিমা : জ্বি ধামরাই,

অফিসার: কতটুকু পড়ালেখা করেছো?

রহিমা: ৮ম শ্রেণী পাস,

অফিসার : কাজ করতে পারবেতো ঠিক মত?

রহিমা: চোখের পানি ধরে রাখতে পারলোনা সে,

জ্বি স্যার যা বলেন আপনি আমি তা করবো, অনেক প্রয়োজন আমার চাকরিটা

প্লিজ স্যার আমাকে চাকরিটা দিন।



চাকরিটা হয়ে গেল অবশেষে রহিমার, সে আজ অনেক কাঁদবে রাতে, তবে এই কান্না কষ্টের নয় অনন্ত সুখের, তার আর কোন চিন্তা নেই, সে এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে মাসে মাসে তার ৮-৯ হাজার টাকা আয়, ক্বোরআন খতম দেয় মাঝে মাঝে বাবা মায়ের জন্য।

খুব সুখেই কাটছে তার জীবন, ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে এখন সে স্বপ্ন দেখে তার, শত স্বপ্ন আজ তার চোখে এসে বাসা বেঁধেছে ।


অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে রহিমার,

সহকর্মী তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলো তার কর্মস্থলের একজন, আত্মহারা খুশিতে রহিমা, সব কল্পনা মনে হচ্ছে তার কেমন জানি ।


রহিমার স্বপ্ন সত্যি সত্যিই আজ পূরণ হতে যাচ্ছে, আজ তাদের বিয়ে, সেজেছে রহিমা বউ সাজে, খুব সুন্দর লাগছে আজ তাকে গলায় মালা, হাতে চুড়ি,, নাকে ফুল কানে দুল, , খুশিতে যেন মুখরিত আজ তার মনের চার দেয়াল।



আজ রহিমার বিয়ে হয়ে গেল, তাকে তার স্বামী খুব ভালোবাসে, তাদের জীবন খুব সুখেই কাটছে, রহিমার কুলে এলো একটা ফুটফুটে পুত্র সন্তান একবছর পর তাদের সেই সুখকে দ্বিগুন বাড়িয়ে দিতে , তার কোলে এ'যেন এক সুখের পাহাড়, আজ রহিমার অনেক সুখী, তার স্বামীও অনেক সুখী, দুঃখ আর তাদের ছুঁতে পারেনা, কোন ঢেউ যেখানে দুঃখ নামের নেই ।


অদম্য সাহসী মহিলা

এভাবেই প্রত্যেকটা গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবনে লুকিয়ে আছে , একেকটা রহিমার গল্প, যা হয়তো আমরা দেখিনা, বা উপলব্ধি করতে পারিনা, ভালোবাসি রহিমাদের, সুখের সাগরে ভেসে থাকুক, বোন রহিমারা হাজার সালাম তোমাদের।



14 views0 comments

Comentários


bottom of page